পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও বিআইডব্লিউটির সাবেক চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকারকে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ওয়ান্ডারেলা পার্ক থেকে নারীসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার তার বাড়ি এবং পার্শ্ববর্তী জায়গা জমিতে এই পার্কটি গড়ে তোলেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে তিনি এখানেই অবস্থান করছিলেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে দুই নারী তাদের প্রাপ্য অর্থ নিয়ে পার্কের ভিতরে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এসময় একজন ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনও সেখানে যোগ দেন। ওই সময় পুলিশ ও জনতা ড. শামসুদ্দোহাকে আটক করে। এসময় চার নারীকে আটক করা হয়। পুলিশ তাদের কোর্টে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, ড. শামসুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে আটক করা হয়েছে। তবে কোনো মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি। আটক চার নারী ও পার্কের এক কর্মচারী আপাতত পুলিশ হেফাজতে আছেন। তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা এবং তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতে ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলূল হোসেনের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম গত বছরের জুলাই মাসে এ চার্জশিট জমা দেন।
দুদকের সূত্র মতে, শামসুদ্দোহা বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করেন। এসব অর্থ বিভিন্ন তফশিলি ব্যাংকের হিসাবে সন্দেহজনক উৎসের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অস্বাভাবিক লেনদেন করেন। এ প্রক্রিয়ায় তিনি ২১ কোটি ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা রেখে পরে তা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তুলে এর অবস্থান, উৎস ও মালিকানা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন।
এছাড়া সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনসহ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দেন। দুদকের অনুসন্ধানে আরও ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২), ২৭(১) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়।
তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধেও ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এআরএস/এসআর