সুন্দরবনের জলদস্যু ছোট সুমন বাহিনীর ৪ সহযোগীকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড। পূর্ব বনের চাঁদপাই রেঞ্জের পশুর নদীসংলগ্ন ছোট পদ্মা খাল এলাকা থেকে জেলে অপহরণের চেষ্টাকালে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া পৃথক আরও দুটি স্থানে অভিযান চালিয়ে গাঁজা, ইয়াবা ও দেশীয় অস্ত্রসহ আরও ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
কোস্ট গার্ড জানায়, সুন্দরবনের পশুর নদীসংলগ্ন ছোট পদ্মা খাল এলাকায় জলদস্যু ছোট সুমন বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্রসহ জেলেদের অপহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে—এমন গোপন সংবাদ তাদের কাছে আসে। শনিবার রাত ১টার দিকে কোস্ট গার্ড ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযান চলাকালে উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে কোস্ট গার্ড সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে সুমন বাহিনীর ৪ সহযোগীকে আটক করে। পরে তল্লাশি চালিয়ে ১টি একনলা বন্দুক, ৪ রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ৪ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—মো. বিল্লাল হোসেন (২৫), মো. রবিউল শেখ (৩২), মো. জিন্নাত হাওলাদার (৩৫) ও মো. কালাম গাজী (২৪)। তাদের বাড়ি খুলনা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে তারা ছোট সুমন বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতি এবং অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের মাধ্যমে সহযোগিতা করে আসছিল বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
অন্যদিকে, রাত ২টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন কৈখালী শ্যামনগরের সরকারি মহসিন কলেজসংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ৫০ পিস ইয়াবা ও নগদ ১৭ হাজার ৫৮০ টাকাসহ এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। এছাড়া ভোর ৫টার দিকে লবনচরা সুইচগেটসংলগ্ন এলাকা থেকে ৪টি দেশীয় অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্যকে আটক করে কোস্ট গার্ড। জব্দকৃত মালামাল ও আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা।
কোস্ট গার্ডের (বিসিজিএস স্বাধীন বাংলা) জাহাজের নেভিগেটিং কর্মকর্তা লে. মো. খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, সম্প্রতি সুন্দরবনে জলদস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন উন্মুক্ত ঘোষণার পর সেখানে কয়েক হাজার জেলে অবস্থান করছে। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণের চেষ্টা করছে জলদস্যুরা। তবে কোস্ট গার্ডসহ সব প্রশাসন তৎপর রয়েছে। সুন্দরবন থেকে দস্যুদের নির্মূল করতে অন্যান্য প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সুন্দরবনকে মাদক ও দস্যুমুক্ত রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে বলে জানান তিনি।
এসএস/আরএন