পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার রাজাপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসার একাডেমিক ভবন এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় কাঠের খুঁটি ও ছাউনি নড়বড়ে হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পাঠদান করছেন শিক্ষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১৭ বছর আগে নির্মিত ১২ কক্ষ বিশিষ্ট টিনশেড ভবনটিতে এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কার হয়নি। বর্তমানে দুটি কক্ষে নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস চলছে। একটি কক্ষে সুপারের অফিস এবং অপরটি শিক্ষক মিলনায়তন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বৃষ্টির দিনে টিন ফুটো হয়ে পানি ঝড়ে। মেঝেতে কাদা পানি জমে একাকার। ঝড়, বন্যার সময় ক্লাস করানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাবাসসুম জানায়, 'শ্রেণী কক্ষের অবস্থা এতই খারাপ যে সবসময় আতঙ্কে থাকি। কখন ঝড়ে হেলে পড়ে। কখনও মনে হয় ছাউনি উপড়ে পড়বে।
সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী উম্মে খাদিজা জানায়, 'টিনের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি মেঝেতে পড়ায় কাদা পানির মধ্যে বসে পড়তে হয়। অনেক সময় বইপত্র ভিজে যায়। ঝড় হলে ঘর নড়ে ওঠে। তখন ভয়ে ক্লাসে মনোযোগ থাকে না।'
অভিভাবক মো. মিজানুর বলেন, 'আমাদের সন্তানরা আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এই ভয়ের মধ্যে থাকি আমরা।'
মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা মো. মহসীন বলেন, 'এখানে বর্তমানে শিক্ষার পরিবেশ নেই। শিক্ষার্থীরা ভয়ে অমনোযোগী থাকে। বর্ষায় উপস্থিতিও কমে যায়। একটি নতুন একাডেমিক ভবন খুবই জরুরি।'
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. আজহার উদ্দিন বলেন, 'পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভবনটির অবস্থা খারাপ। নতুন ভবনের আবেদন নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছি। কিন্তু সুফল পাইনি।'
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাওলানা মো. রহমত উল্লাহ বলেন, 'শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর সন্তোষজনক ফলাফল করছে। আরও ভালো করার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পাঠদান ব্যাহত করছে। নতুন ভবনের জন্য আমি নিরন্তর চেষ্টা করছি।'
পটুয়াখালীর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চাহিদা পাঠিয়েছি। অনুমোদন এলেই ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।'
এএস/এমএ