নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে এক শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) নবম শ্রেণির ক্লাস চলাকালে এবং আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলাকালে এই দুটি ঘটনা ঘটে।
প্রথম ঘটনায় সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান (২৮) ছাদের পলেস্তার খসে পড়ায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার মাথায় ৬টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন।
আজকের ঘটনায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিদুল (১৪) সামান্য আঘাত পায় এবং তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৫ সালে নরসিংদী জেলা পরিষদের অর্থায়নে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মিত হয়। প্রায় এক বছর ধরে ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তার খসে পড়ছে, অনেক জায়গায় রড বেরিয়ে এসেছে এবং সেগুলোতে মরিচা ধরেছে। বিকল্প শ্রেণিকক্ষ না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হোসাইন মো. মোস্তফা বলেন, “গতকাল দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে নবম শ্রেণির গণিত ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষক মিজানুর রহমান। হঠাৎ করে তার ওপর ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে। এতে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। আজও সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ওপর একইভাবে পলেস্তার পড়ে সে আহত হয়।”
বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মারুফ বলেন, “ভবনটি অত্যন্ত নাজুক। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ৬০০ জন শিক্ষার্থী পড়ছে। সবাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অভিভাবকরাও আতঙ্কে আছেন। এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আমরা আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিয়া জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “অতিরিক্ত ক্লাসরুমের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জরাজীর্ণ কক্ষে ক্লাস নিতে হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অভিভাবকরা সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এই পরিস্থিতিতে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে দ্বিধায় পড়ছেন।”
শিবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, “মোহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ছাদের পলেস্তার খসে পড়ায় ছাত্র-শিক্ষক আহত হয়েছেন। তবে এ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, “আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। ছাত্র-শিক্ষক আহত হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে, নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এসএম/আরএন