জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও আসামি থেকে রাজসাক্ষীতে পরিণত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, এত বড় একটি গণহত্যা আমার দায়িত্বকালেই সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনার জন্য আমি দেশবাসী, নিহত ও আহতদের পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন তিনি।
ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে মামলার একমাত্র রাজসাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
সকালে তাকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। দুপুরের বিরতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত থাকলেও বিকেলে পুনরায় জবানবন্দি উপস্থাপন করেন তিনি।
নিজ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের একাদশ দিনে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন চৌধুরী মামুন। প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ‘ক্যামেরা ট্রায়াল’-এর মাধ্যমে তার জবানবন্দি নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আজ ছিল মামলার ১১তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ। এর আগে মামলায় মোট ৩৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও কামাল বর্তমানে পলাতক আসামি।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনালে দায় স্বীকার করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজসাক্ষী হতে চান চৌধুরী মামুন। একই সঙ্গে তিনি নিজের দায় স্বীকার করেন।
৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সাক্ষ্যগ্রহণে উঠে এসেছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের বীভৎস চিত্র। শহীদ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা এসব অপরাধের জন্য শেখ হাসিনা, কামালসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
আরএন