কয়েকদিন ধরে পানি কমে যাওয়ার পর আবারও তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ শনিবার সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
মূলত শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পানি সমতল ২৯ সেন্টিমিটার বেড়ে যায় এবং এখন তা ধীর গতিতে বাড়ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ৯টায় ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২.১৫ মিটার, যা বিপদসীমার সমান। গত কয়েকদিন তিস্তার পানি বিপদসীমার কাছাকাছি থাকলেও পরে কিছুটা কমে যায়। তবে শুক্রবার বিকেল থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করে। উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ও সিকিমের তিস্তা অববাহিকার পাহাড়ি এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বর্তমানে তিস্তার পানি বাড়ছে, যার ফলে তিস্তা পাড়ের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে পশ্চিমবঙ্গের দোমোহনী পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৯টায় পানি সমতল ছিল ৮৫.৫৯ মিটার, যা রাত ৮টায় কমে দাঁড়ায় ৮৫.৫২ মিটারে—১১ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে।
গজলডোবা ব্যারাজ পয়েন্টে একই সময়ে পানি সমতল ছিল সকাল ৯টায় ১০৯.৫০ মিটার এবং রাত ৮টায় ১০৯.৪৫ মিটার—১১ ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে।
উজানে পানি কমতে থাকায় শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত তিস্তার পানি ধীরে বাড়লেও পরে তা স্থিতিশীল হয়ে কমতেও পারে। তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় আবারও পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের তিস্তা-সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
উল্লেখ্য, লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার ওপর দিয়ে তিস্তা নদী প্রবাহিত হওয়ায় নদীর পানি সামান্য বাড়লেই এসব উপজেলার নদীতীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়। ইতোমধ্যে উজানের ঢলের কারণে জেলার ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়লে বন্যার পরিধিও বাড়বে এবং নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এখনো পর্যন্ত বড় ধরনের বন্যা না হলেও এটি বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিস্তা পাড়ের মানুষজন।
তিস্তা ব্যারাজ কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীতীরবর্তী এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এমএস/আরএন