ভরা বর্ষা মৌসুমেও এ বছর অধিকাংশ এলাকায় খাল বিল নদী-নালাগুলো পানি শুন্য। বন্যা না হওয়ায় খাল-বিল, পুকুর-ডোবা কোথাও পর্যাপ্ত পানি নেই। এতে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার গোয়ালের চর, গাইবান্ধা, চর গোয়ালিনী, চর পুটিমারী,পার্থশী, পলবান্ধা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানির অভাবে পাট কাটতে পারছেন না কৃষকরা। বন্যার পানির আশায় পাট না কেটে ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন অনেকে। আবার যারা কিছু পাট কেটেছেন, তাদের অনেকেই অটোভ্যান, ইঞ্জিনচালিত ভটভটি ও মহিষের গাড়িতে করে দূরে নিয়ে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অল্প পানিতে পাট পঁচানোর কারণে ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে আঁশ। অনেকেই পাট কেটে জমির পাশে ফেলে রেখেছেন। এতে অতিরিক্ত সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয়সহ দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চাষিদের।
মোহাম্মদপুর এলাকার কৃষক মোস্তফা মিয়া বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে এবার একটু বৃষ্টি হলেও বন্যার কারণে অন্য বছর এ সময় পানিতে টইটম্বুর থাকে খাল-বিল। এ বছর কোথাও পর্যাপ্ত পানি নেই। বাড়ির পাশে পুকুরে সামান্য বৃষ্টির পানি জমেছে। উপায় না পেয়ে সেখানেই পাট জাগ দিতে হচ্ছে। পানির অভাবে পাটের আঁশ ছাড়ানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
পলবান্ধা এলাকার কৃষক মজির শেখ (৫০) বলেন, 'আগে যে ডোবায় পানি থাকত, এখন তা একদম শুকিয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে অন্যের পুকুরে জায়গা ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতেছি।'
মোজাআটা গ্রামে পাট চাষি দুদু শেখ (৫৫) বলেন, 'কয়েকদিন আগে দুই বিঘা জমির পাট কেটেছি। কিন্তু জাগ দেওয়ার মতো পানি নেই। রোদে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে, এবার মনে হয় ক্ষতি হবেই।'
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইসলামপুর উপজেলায় এবার ৭ হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় এবার প্রতি বিঘায় গড়ে ৯ মণ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বন্যা না হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন কৃষকরা।'
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল আহমেদ বলেন, 'ফলন ও দাম অনুযায়ী এবার কৃষক পাট চাষে লাভবান হবেন আশা রাখি। বন্যা না হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি রয়েছে।'
এলএইচ/এমএ