নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে এক সময়ের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য এবং এডাব-এর সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম এম মোজাম্মেল হকের শূন্যতা আজও গভীরভাবে অনুভব করেন এলাকাবাসী। তাঁর কর্মনিষ্ঠ নেতৃত্ব, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং নির্লোভ রাজনীতিক চরিত্র এলাকার মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছে। তাঁরই জ্যেষ্ঠপুত্র ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জু সেই স্বপ্ন হৃদয়ে ধারণ করে দলকে সুসংগঠিত করতে রাজনীতির মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রয়াত মোজাম্মেল হকের জীবনের মূলমন্ত্র ছিল,"নেতৃত্ব নয়, সেবা"। রাজনৈতিক জীবন শুরুর আগেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজ, খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজ, আহমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়, গুরুদাসপুর চক্ষু হাসপাতালসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি একটি জনকল্যাণমুখী রাজনীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, যা আজও এলাকাবাসীর জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
ব্যারিস্টার রঞ্জু সেই ছোট বেলার বাবার দীক্ষায় জনসেবা করতে রাজনীতির মাঠে রয়েছেন। তিনি একজন পেশাদার আইনজীবী এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি সম্পন্ন করে দেশে ফিরে তিনি শুধু পেশাগত ক্ষেত্রেই নয়, মানবিক কাজেও ব্যাপক সক্রিয়। অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা, নানা সামাজিক উদ্যোগে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেকে মানুষের পাশে নিয়ে যেতে সচেষ্ট হয়েছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে নাটোর-৪ আসনের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন, গ্রাম এবং পাড়া মহল্লায় নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন ব্যারিস্টার রঞ্জু। তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময়, প্রবীণদের কাছে দোয়া প্রার্থনা এবং সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টে পাশে দাঁড়ানো তাঁর নির্বাচনী প্রচেষ্টার অংশ। তাঁর মতে, "আমি রাজনীতি করছি ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে।"
তৃণমূল বিএনপি কর্মীদের সাথেও তিনি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছেন। নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য হিসেবে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, দলীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময় করছেন।
লন্ডনে ব্যারিস্টারি অধ্যয়নকালীন ও পরে দেশে ফিরে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে ২০ থেকে ৩০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি আইনের ওপর একাধিক বইও লিখেছেন, যা পেশাগত এবং একাডেমিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। একজন শিক্ষিত, গবেষণামুখী ও আধুনিক চিন্তার রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তাঁর আলাদা অবস্থান ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে।
নাটোর-৪ আসনে ব্যারিস্টার রঞ্জুর জনপ্রিয়তা বাড়ার অন্যতম কারণ তাঁর পিতার সুনাম, অবদান আর নিজের জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মোজাম্মেল হকের প্রতি যে শ্রদ্ধা রয়েছে, তা তাঁর পুত্রের প্রতিও ছায়ার মতো বিস্তৃত। স্থানীয় এক প্রবীণ শিক্ষানুরাগী রেজাউল করিম বলেন, “মোজাম্মেল হক ছিলেন একজন মানবিক বিপ্লবী। তাঁর সন্তান রঞ্জুও যেন সেই ধারারই প্রতিচ্ছবি।”
স্থানীয় বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মে আলোচনা থেকে জানা যায়, ব্যারিস্টার রঞ্জুর প্রতি মানুষের প্রত্যাশা বাস্তবভিত্তিক। তাঁরা চান, তাঁর মাধ্যমে মোজাম্মেল হকের সেবা ও নীতির ধারা আবারও চালু হোক।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নাটোর-৪ আসনে বেশ কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও ব্যারিস্টার রঞ্জুর প্রার্থীতা স্থানীয় পর্যায়ে অন্যতম আলোচিত ও গ্রহণযোগ্য। তৃণমূল কর্মীদের একটি বড় অংশ মনে করেন, তাঁকে মনোনয়ন দিলে তিনি নিশ্চিতভাবেই ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে পারবেন।
তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গিও স্পষ্ট। ব্যারিস্টার রঞ্জু মনে করেন, “বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে জনগণের অধিকারভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা বাস্তবায়নে সময়োপযোগী নেতৃত্ব প্রয়োজন—যারা শিক্ষিত, সৎ ও মানবিক।”
নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, নাটোর-৪ আসনে ব্যারিস্টার রঞ্জুকে ঘিরে আশাবাদ বাড়ছে মানুষের মধ্যে। বাবার রেখে যাওয়া রাজনৈতিক-মানবিক উত্তরাধিকারের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। সেই দায়িত্ব পালনে তিনি কতটা সফল হবেন, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখনই পরিষ্কার—নাটোর-৪ এর সাধারণ মানুষ এক সুশিক্ষিত, আদর্শিক এবং মানবিক নেতৃত্বের জন্য তাকিয়ে আছেন সেই পরিচিত মুখটির দিকেই, যাঁর নাম ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জু।
এমএএম/এসআর