পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের প্রথম দুই বছরের মধ্যে সংলাপে গৃহীত সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়টি বিএনপি সমর্থন করে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২১তম দিনের আলোচনায় এ মত জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর একটি খসড়া পেয়েছি, যা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এতে বিস্তারিত প্রস্তাবনা নেই, সেগুলো পরে যুক্ত হবে। তবে খসড়ার মূল কাঠামোর সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। এর শব্দচয়ন, গঠন ও বাক্য নিয়ে আমাদের কিছু পর্যবেক্ষণ আছে, যা আগামীকাল কমিশনে জমা দেব।”
তিনি জানান, খসড়ায় দুই বছরের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের বিষয়টিকে বিএনপি সমর্থন করছে। বলেন, “যেসব সংস্কারের জন্য আইন কিংবা সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে, তা তো এই প্রক্রিয়ারই অংশ। এই জন্যই তো ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে।”
বিএনপি সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চায় বলে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, “আইনের মাধ্যমে নিয়োগ হলে আইনি ত্রুটি সংশোধন করা সহজ হবে। আমরা চাই কার্যকর নির্বাহী বিভাগ থাকুক, তবে সেটি যেন চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের ভেতরে থাকে। সবকিছু সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হলে সংশোধন কঠিন হয়ে পড়ে, তাই শক্তিশালী আইনই হতে পারে কার্যকর সমাধান।”
নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়নের প্রস্তাব দিয়েছি। তার পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে। আমরা চাই নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক, তবে বাস্তবতা বিবেচনায় ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।”
ন্যায়পাল নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, “ন্যায়পাল এখনো কার্যকর হয়নি। আমরা চাই আগে এটি প্রতিষ্ঠিত হোক, এরপর আইন যুগোপযোগী করে তার ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্দিষ্ট করা হোক। শুধু তদন্তের ক্ষমতা নয়, তার প্রতিবেদন বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতেও আলাদা আইন দরকার।”
সংস্কার কমিশনের ৭০০-এর বেশি সুপারিশের মধ্যে প্রায় ৬৫০টি সুপারিশে বিএনপি একমত বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। বাকি প্রস্তাবগুলোর জন্য বিএনপি সংশোধনী বা পরামর্শ দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “সব প্রস্তাব জাতীয় সনদে থাকবে না। তবে সংবিধান সংশোধনের মতো মৌলিক প্রস্তাবগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।”
এসআর