সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি এজেন্ডা নিয়ে সরকার যা ঘোষণা করেছে, সেটি সামাল দিতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন জনতার দলের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম কামাল। তিনি দাবি করেছেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনে সংস্কার নিয়ে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো ঐক্যমত পাওয়া যাচ্ছে না, ছোটখাটো বিষয় ছাড়া। জনতার দল মনে করে সরকার সংস্কার নিয়ে খুব একটা এগোতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দলটির বিভাগীয় মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) মাহাবুবুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) সাব্বির আহমেদ, কর্নেল (অব:) আবুল কালাম মো: জাকি, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব মেজর (অব:) জাকির হোসেন, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর (অব:) বদরুল আলম সিদ্দিকী, মুখপাত্র ও মুখ্য সমন্বয়ক মেজর (অব:) ডেল এইচ খান।
শামীম কামাল বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচলিত ‘পাস্ট দ্য পোস্ট’ সিস্টেম রয়েছে। আমরা মনে করি, জনতার দলের পক্ষ থেকে লোয়ার হাউস (নিম্ন কক্ষ) থাকলে বর্তমান সংসদীয় সিস্টেমই ভালো। আর আপার হাউস (উচ্চকক্ষ) থাকলে সেখানে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) সিস্টেম থাকলে প্রত্যেক দলের প্রত্যেক শাখার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। এমন একটা ব্যালেন্স নিয়ে টেস্ট ও ট্রায়াল করে কিছুদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে, তারপর দেখা যাবে ফলাফল কী হয়। তবে পিআর পদ্ধতি নিয়ে বলব, সভ্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে এটি সম্ভব হলেও আমাদের মত ভঙ্গুর গণতন্ত্রের দেশে এটা সম্ভব না।”
তিনি বলেন, “বিগত ৫৪ বছরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রায় ৯৫% দুর্নীতি করে থাকে। বড় কোনো রাজনৈতিক দলের পরিবারের বাইরে বড় পদে কেউ জায়গা পায় না। তাদের ছেলে-মেয়েরা বিদেশে পড়াশোনা করে।”
শামীম কামাল আরও বলেন, “সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিন এজেন্ডা নিয়ে সরকার যা ঘোষণা করেছে, সেটি সামাল দিতে পারছে না। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনে সংস্কার নিয়ে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো ঐক্যমত পাওয়া যাচ্ছে না, ছোটখাটো বিষয় ছাড়া। জনতার দল মনে করে সরকার সংস্কার নিয়ে খুব একটা এগোতে পারবে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বিচার একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া। এটি অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব নয়। তবে দুই-তিনজন শীর্ষস্থানীয় অপরাধী বা স্বৈরাচারীদের যদি টোকেন বিচার করা যায়, সেটি হতে পারে।”
তিনি বলেন, “এখন সরকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে নির্বাচনকে। জনগণ অতিষ্ঠ, তারা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়। সেই মুক্তির জন্য আপাতত একটি নির্বাচন আয়োজন করেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা উচিত। আমি মনে করি, সেটাই হবে সরকারের সর্বোত্তম পদক্ষেপ।”
তিনি আরও জানান, “এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৬০টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। নিবন্ধন না পেলে তারা স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।”
আরএন