নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল সংখ্যক গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র সহ সোহেল মিয়া (৩৭) নামে এক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে রায়পুরা থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নরসিংদীর পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান। এর আগে সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মিয়া উপজেলার সায়দাবাদ এলাকায় নুরুল ইসলামের ছেলে। সম্প্রতি গৃহবধূ শান্তা ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসেন সোহেল। এরপর থেকেই তাকে গ্রেপ্তারের অভিযান চালায় পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান বলেন, শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদে পূর্ব শত্রুতার জেরে হানিফ মাস্টার গ্রুপ এবং এরশাদ গ্রুপ এর মধ্যে গুলাগুলির ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এরপর সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং র্যাব এর সমন্বয়ে ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে যৌথ বাহিনীর সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মেঘনা নদী থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ সোহেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ১ টি এসবিবিএল একনালা বন্দুক, ৪ টি একনালা দেশীয় তৈরী বন্দুক, ২ টি সিলভার কালারের ম্যাগাজিন, ৩০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৪ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১২ টি শর্টগানের শীসা কার্তুজ, ৩ টি মোবাইল ফোন, ইউএস ডলার ও নগদ অর্থ সহ ১ টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়।
শীর্ষ সন্ত্রাসী সোহেলের বিরুদ্ধে ৪ টি হত্যা মামলা, ২ টি অস্ত্র মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে আরো ৬ টি মামলাসহ সর্বমোট ১২ টি মামলা রয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের নজরদারি অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে অভিযানে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন ৫৬ ইবি নরসিংদী আর্মি ক্যাম্পের মেজর ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ আসাদ, পুলিশের নেতৃত্ব দেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার বায়েজিদ বিন মনসুর, র্যাব এর নেতৃত্ব দেন নরসিংদী র্যাব ক্যাম্প কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল রানা।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন যাবত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রায়পুরার চরাঞ্চল সায়দাবাদ ও বালুরচর এলাকার মধ্যে বিরোধ চলছিলো। এরই জেরে সোমবার ভোরে বালুর চরের এরশাদ গ্রুপের লোকজন সায়দাবাদ গ্রামে এসে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় সায়দাবাদ গ্রামের হানিফ মাস্টার সমর্থক আক্তার মিয়ার স্ত্রী মোমেনা বেগমকে হত্যা করা হয়। এছাড়া আহত হয় মহরম আলীর ছেলে নাজিমুদ্দিন (৪৫), জামাল মিয়ার ছেলে সিয়াম (১৬), মনির মিয়ার ছেলে মাহিন (২০), তাজুল ইসলাম, ও রানা মিয়া (২০)।
টিএস/এসআর