পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ–বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “স্থানীয় জনগণ তিস্তা নদীতীরে স্থায়ী বাঁধের দাবি করছেন। কিন্তু দেড় বছরের একটি সরকারের কাছে এত অল্প সময়ে এত দাবি করলে আমরা কীভাবে সব বাস্তবায়ন করব? ইতিপূর্বে তিস্তা নদীর বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি গণশুনানি করেছি। এসব শুনানির তথ্য সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনার ডিজাইন চূড়ান্ত হবে।”
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন তিস্তা নদীর তীরে রক্ষামূলক চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “তিস্তা আমাদের নদী। ভাটির দেশ হিসেবে তিস্তার ওপর আমাদের ন্যায্য অধিকার রয়েছে। স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কীভাবে তিস্তা সুরক্ষিত রাখতে পারি, তা নির্ধারণে নদীর পাঁচটি স্থানে গণশুনানি করেছি। এরই মধ্যে ১৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার অতিভাঙনপ্রবণ এলাকায় ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোথাও ভাঙন দেখা দিলে সেখানেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপদেষ্টা বলেন, “২০১৬ সালে চীনের সঙ্গে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। তবে সেটি খুব বেশি অগ্রসর হয়নি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আবারও চীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। আমরা তিস্তাপাড়ের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা গণশুনানিতে শুনে সেগুলো পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করেছি। এখন সরকারের আরও দুটি পর্যায়ে এই পরিকল্পনা যাচাই–বাছাই হবে। এরপর অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত ডিজাইন দেওয়া হবে। তারপর প্রকল্প বাস্তবায়নে কত অর্থ লাগবে তা নির্ধারণ করে দুই দেশের মধ্যে দর–কষাকষি হবে। এরপরই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে।”
এদিন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দুপুর ১২টায় রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ে চলমান কাজ পরিদর্শনে আসলে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলের চারাগাছ উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পরে তিনি তিস্তা নদীর তীররক্ষা–সংক্রান্ত চলমান জিও ব্যাগ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি তিস্তাপাড়ের ভাঙনকবলিত নারী–পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নদীতীরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান, রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মোজাহিদ এবং স্থানীয় তিস্তা নদীপাড়ের হাজারো সাধারণ মানুষ।
এমপি/আরএন