বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের প্রথম শহীদ আজাদ সরকারকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার এক বছর পর মামলার প্রধান আসামি মো. মনির হোসেন মিঠু কাজীকে (৫২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় বুধবার রাতে নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মনির হোসেন হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮ নং ওয়ার্ড টোরাগড় এলাকার কাজী বাড়ির বাসিন্দা।
মামলার বাদি আহম্মেদ কবির হিমেল এ তথ্য জানান।
গত বছর ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন ০৪ আগস্ট (রোববার) বিকেলে নিজ বসতবাড়ির সামনে পৌরসভাধীন ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি হিমেলের বাবা আজাদ সরকারকে কুপিয়ে আহত করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাতেই কুমিল্লার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ১৩ দিন পর নিহতের ছেলে আহম্মেদ কবির হিমেল বাদি হয়ে ওই বছরের ১৪ আগস্ট (বুধবার) ১৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামি হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কাজী মনির হোসেন মিঠুকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
এছাড়াও মামলার অপর নামীয় আসামিরা হলেন, একই এলাকার কাজী বাড়ির বাসিন্দা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোবারক কাজী, আওয়ামী লীগ নেতা বশির কাজী, বাদল কাজী ও নুরু কাজী, ছাত্রলীগ নেতা তুষার কাজী, রাকিব কাজী, সিয়াম কাজী ও রুবেল কাজী।
মকিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল আলম বেপারী, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলম শুভ, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা ও গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসিন্দা হাজী জসিম উদ্দিন, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের বাসিন্দা সুমন।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, 'দীর্ঘদিন পলাতক থাকা অবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে বুধবার রাতে নারায়ণঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকা থেকে মিঠু কাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।'
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে নিজ বাড়ির সামনে চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কে মিছিল চলাকালে আজাদ সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে নৈতিক সমর্থন প্রদান করে। এ সময় একদল সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী আজাদ সরকারের কাছে পানি পান করিতে চান।
তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পানি পান করানো বিষয়টি দেখতে পেলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের মামলার নামীয় আসামি মো. মনির হোসেন মিঠু (মিঠু কাজী) সহ এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাত আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আজাদ সরকারের উপর অতর্কিত হামলা এবং মারধর করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং এ দিন রাতেই কুমিল্লার একটি হাসপাতালে মারা যান।
এইচইউ/এমএ