Monday | 27 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Monday | 27 October 2025 | Epaper
BREAKING: সংস্কার নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার তথ্য সঠিক নয়      কাদের নিয়ে বিএনপি জোট করবে জানালেন সালাহউদ্দিন      সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রকাশ      জ্বালানি সংকটে মালিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা      উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল চলাচল শুরু      ড্যাফোডিল-সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাংচুর-যানবাহনে অগ্নিসংযোগ       এল ক্লাসিকোয় রিয়ালের জয়      

বোরো ধান ঘরে তোলার আগেই হঠাৎ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা

Published : Sunday, 8 June, 2025 at 12:37 PM  Count : 252

নাটোরের চলনবিল অধ্যুষিত গুরুদাসপুর ও তাড়াশ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় নতুন পানিতে ভেসে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সময়ের আগেই আসা বন্যার পানিতে ডুবে যাচ্ছে সদ্য পাকা বোরো ধান। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। হাট-বাজারে শ্রমিক সংকট ও ধান সংরক্ষণের সমস্যাও যেন কৃষকের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলনবিল এলাকায় পানির উচ্চতা ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে যারা সরিষা তোলার পর নমলা জাতের বোরো ধান রোপণ করেছিলেন, তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। অনেক জমির ধান ইতোমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কেউ কেউ কষ্ট করে ধান কাটলেও শ্রমিক সংকট ও পরিবহন সমস্যার কারণে তা ঘরে তুলতে পারছেন না।

স্থানীয় কৃষক ফিরোজ সরদার জানান, “সরিষা তোলার পর এ বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছিলাম। আবাদ ভালো হয়েছিল, ফলনও ভালো হতো—যদি এই আগাম বন্যার পানি না আসত। এখন ধান পেকে গেছে, কিন্তু সময়মতো তুলতে না পারলে সব পানির নিচে চলে যাবে। শ্রমিক পাচ্ছি না, আর যারা আছে তারা অতিরিক্ত মজুরি চাচ্ছে। অর্ধেক ধান দিয়েও ফসল ঘরে তুলতে পারছি না।”

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, “চলনবিল এলাকায় প্রায় ৩০ ভাগ জমিতে সরিষা তোলার পর নমলা জাতের বোরো ধান রোপণ করা হয়। এটি একটি লাভজনক পদ্ধতি হলেও ঝুঁকিও রয়েছে। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ধান ঘরে তুলতে না পারলে কৃষকরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে দ্রুত শ্রমিক সরবরাহ এবং কৃষকদের জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। দেরি হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।”

স্থানীয় হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, সাধারণত ধান কাটার মৌসুমে যারা দিনমজুর হিসেবে মাঠে কাজ করতেন, তারা অনেকেই এখন অন্য পেশায় যুক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। যারা এখনও ধান কাটার কাজে যুক্ত, তারা দাবি করছেন অতিরিক্ত মজুরি—যা দরিদ্র কৃষকদের পক্ষে বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

গুরুদাসপুরের বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের শিক্ষক ও কৃষিবিদ জহুরুল হক সরকার বলেন, “সরিষার পর নমলা জাতের বোরো ধান চাষ একটি উৎকৃষ্ট কৃষি কৌশল হলেও সামান্য দুর্যোগেই তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সুনির্দিষ্ট আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী চাষ না করলে কৃষকদের এই ধরনের ঝুঁকি নিতে হয়।”

এছাড়াও স্থানীয়ভাবে ধান পরিবহন ও সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে নৌকায় করে ধান ঘরে তুলছেন—যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও শ্রমসাধ্য। অনেক ক্ষেত্রে ধান পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

এই সংকট থেকে উত্তরণে স্থানীয় কৃষক ও সচেতন মহল সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তারা বলছেন, শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, যন্ত্রচালিত ধান কাটার সরঞ্জাম বিতরণ, এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা জরুরি ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে। না হলে চলনবিল এলাকার কৃষকদের এ মৌসুমের ঘামঝরা পরিশ্রম একেবারে ভেসে যাবে পানির স্রোতে।

এমএ/আরএন



LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close