কক্সবাজারের রামু ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকার ত্রাস শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের জাউজপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাবের সমন্বয়ে পরিচালিত এক অভিযানে তাঁর আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গর্জনিয়া এলাকায় শাহীন ডাকাতের বাড়িতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রামু ১০ সেনানিবাসের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে গর্জনিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে গরু ও মাদক চোরাচালানের আশঙ্কা ছিল। এর ফলে জনমনে ডাকাত শাহীনের উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক ভয় ও উদ্বেগ বিরাজ করছিল।
সেনা গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে নজরদারিতে রেখেছিল। সর্বশেষ বুধবার রাতে গোয়েন্দারা খবর পান, শাহীন ডাকাত মাঝিরকাটা এলাকায় একটি বাড়িতে অবস্থান করবে। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের চারটি টহল দল, র্যাব ও বিজিবি যৌথভাবে ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানের সময় সেনা টহল দল শাহীন ডাকাতের বাড়িকে ঘিরে ফেলে। তিনটি কৌশলগত স্থানে সেনাবাহিনী অবস্থান নিলে উপস্থিতি টের পেয়ে শাহীন ও তাঁর সহযোগীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে শাহীন ডাকাত ও তাঁর দুই সহযোগী গ্রেপ্তার হন।
এরপর দুপুরে পাহাড়ি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে একটি একে-২২ রাইফেল, তিনটি দোনলা বন্দুক, ধারালো অস্ত্র, ২০ হাজার ইয়াবা, সামরিক সরঞ্জাম ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করা হয়।
ডাকাত শাহীনের বিরুদ্ধে ৮টি হত্যা ও গুম, ৩টি ডাকাতি, ৪টি মাদক, ২টি অপহরণ এবং ৩টি অস্ত্র মামলাসহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, শাহীন ডাকাত মিয়ানমার থেকে বার্মিজ গরু, সিগারেট, ইয়াবা, আইসসহ নানা মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে প্রবেশ করাতেন। বিনিময়ে চাল-ডাল-তেলসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য মিয়ানমারে পাচার করতেন। এসব কার্যক্রমের পেছনে তাঁর নেতৃত্বাধীন একটি বিশাল অস্ত্রধারী বাহিনী কাজ করত।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সীমান্ত এলাকার অপরাধ কমাতে যৌথ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসানসহ সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাবের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৫ মে ডাকাত শাহীনের বাড়িতে আরও একটি অভিযান চালিয়েছিল যৌথ বাহিনী, যেখানে অস্ত্র, মাদক ও জালনোট উদ্ধার করা হয়।
এসইউ/আরএন