বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আমাদের দুটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল— একটি মূল্যস্ফীতি, আরেকটি মুদ্রাবাজার। এখন মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে, পাশাপাশি বিনিময় হারও স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তখন সুদহারও কমানো হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমলে সুদহারও হ্রাস পাবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হার স্থিতিশীল না হলে জিনিসপত্রের দাম বাড়তো। এখন আমরা কিছুটা স্বস্তিতে আছি। এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের ওপরে ছেড়ে দেওয়ার পরও এর মধ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি, অর্থাৎ এটি স্থিতিশীল রয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে আস্থা এসেছে। আশা করছি, মূল্যস্ফীতি একটি ভালো অবস্থানে পৌঁছাবে।”
গভর্নর আরও বলেন, “খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১৪ শতাংশ ছিল, এখন তা কমে সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। যদিও খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) মূল্যস্ফীতি এখনও তুলনামূলক বেশি, তবে সেটিও কমছে— সাড়ে ১১ শতাংশ থেকে সোয়া ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে খাদ্য, তেল ও গ্যাসের দাম কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। আমরা আশা করছি, আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক, সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য, বিমান, বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের প্রধানরা।
গতকাল বিকেলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি ও অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেট (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পেল।
আরএন