বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলার মনপুরায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় চরকলাতলিসহ মনপুরার বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে দ্বীপ উপজেলা মনপুরার সঙ্গে সারা দেশের নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক থাকার আহ্বান জানায় এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মনপুরার সঙ্গে নৌপথে ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়। এমন পরিস্থিতির কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন মনপুরার সাধারণ মানুষ এবং সংরক্ষিত বনায়নের হরিণসহ বন্যপ্রাণী।
মনপুরার বেড়িবাঁধ এর বাহিরে মাষ্টার হাট, আনন্দ বাজার, দক্ষিণ সাকুচিয়া, রহমানপুর, আন্দিরপাড়সহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ সাকুচিয়া রহমানপুর গ্রামের বেড়িবাঁধ এর অবস্থা খুব খারাপ থাকা স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে আতংক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুপুর ১টার পর থেকে মনপুরা থেকে বিছিন্ন চর কলাতলি ইউনিয়নে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট পানি বেড়ে যায়। এতে এসব এলাকার দোকান ও বসতিগুলো অনেকটাই ডুবে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ ও গবাদী পশু।
এ দিকে সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। তবে বাতাসের বেঘ বাড়ার সাথে সাথে মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং নুরউদিন মার্কেটে, সূর্যমুখী ঘাটে অবস্থান করায় প্রায় শতাধিক ছোট নৌকা ভষভোত হয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছে ক্ষতিগ্রস্তরা।
চরকলাতলি ইউনিয়নের বাসিন্দা সাংবাদিক মিজানুর রহমান জানান, নিম্মচাপের প্রভাবে ভোররাত থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ঝড়ো বাতাস ও উত্তাল সাগরের কারণে মনপুরা সহ সারাদেশের নৌযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি সহজেই ঢুকে পড়ে। কলাতলি, কাজির চর, ঢালচরসহ প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। কোথাও কোথাও ভূমিধস ও জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে।
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিখন বনিক বলেন, ‘নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
আরএইচ/এসআর