কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির পানিতে ধসে গেছে দুধকুমার নদের ডানতীর রক্ষা বাঁধ। এতে স্থানীয়দের মধ্যে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, বন্যা ও নদীভাঙন রোধে নলেয়া ও ইসলামপুর গ্রামকে রক্ষার জন্য প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকাজে যথাযথ মনিটরিংয়ের অভাব ও সঠিকভাবে ডাম্পিং না করে সিসি ব্লক বসানোর কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই বাঁধ ধসে পড়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, প্রকল্পের কাজ এখনও চলমান এবং তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ বুঝে নেননি। তাই অনিয়মের দায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর বর্তাবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০২১ সালের ১০ আগস্ট একনেক বৈঠকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা বিভিন্ন প্যাকেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, দুধকুমার নদীর ডানতীর রক্ষায় পাউবোর বাস্তবায়নে ১৪ নম্বর প্যাকেজের আওতায় চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় ৫০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ পেয়েছে ঢাকার মগবাজারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিআই-পিভিএল-জেডআই জেভি। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইসলামপুর মৌজায় বাঁধ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হলেও টানা বৃষ্টির কারণে বাঁধের কিছু অংশ ধসে গেছে। সিসি ব্লকগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, “নদীভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণ শুরু হওয়ায় আমরা আশার আলো দেখেছিলাম। কিন্তু এখন বন্যা না এসেই বাঁধ ধসে গেছে। দ্রুত মেরামত না হলে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।”
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম বলেন, “প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান। এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য ইউ-ড্রেন না থাকায় বৃষ্টির পানি শূড়ঙ্গ হয়ে বাঁধের ভেতরে ঢুকে পড়ে ধস সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানি কমলে বাঁধ মেরামত করা হবে।”
পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাফিয়া আখতার জানান, “বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বাঁধের ধসে যাওয়া অংশ পুনর্নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় দায়িত্বও তাদের।”
এএইচ/আরএন