প্রায় দু’বছর আগে মারা যাওয়া এক অধ্যাপককে কুড়িগ্রামের রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল ৫৩ বছর বয়সে মারা যান। তাঁর হার্টের সমস্যা ছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি/পদায়ন করা হয়। ওই তালিকায় তিনি ১৩ নম্বরে রয়েছেন। এতে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনকে অধ্যাপক পদ থেকে মাউশি অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় অবস্থিত সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.টি.এম. শওকত আকবর বলেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ আ.ন.ম. আজিজুর রহমান অবসর গ্রহণ করেন। এরপর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। মাউশি থেকে এখন এখানে অধ্যক্ষ নিয়োগ হলে আমি পূর্বের পদে বহাল থাকব। মৃত ব্যক্তির পদায়নের বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে জানতে সদ্য পদায়ন পাওয়া সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর স্ত্রী তাহমিনা শবনম বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী বাহিনীর আক্রমণে আমার স্বামীর বাম হাত ও পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়াও তিনি হার্টের রোগী ছিলেন এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল তিনি মারা যান। ২০২৩ সালের মে মাসে সরকারি গোয়েন্দা শাখার লোকজন আমার কাছে তাঁর পদায়নের বিষয়ে যোগাযোগ করলে আমি তাদের জানিয়েছিলাম যে আমার স্বামী মারা গেছেন। এছাড়াও আমি আমার স্বামীর পেনশনের টাকা উত্তোলন করেছি। এত দিন পর মাউশি তাঁকে পদায়ন করল, অথচ তাঁর পদায়ন আগেই হওয়া উচিত ছিল।
মৃত জামাল উদ্দীন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। একজন মৃত ব্যক্তির নাম কীভাবে পদায়নের তালিকায় এলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পিএম/আরএন