সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুরের জয়নাবাড়ি এলাকায় দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় হোসেন আলী নামের এক ইন্টারনেট ব্যবসায়ীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন মশার ছোট ভাই রাকিব আহমেদের বিরুদ্ধে। এসময় হোসেন আলীর ডাক চিৎকারে বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা হোসেনকে বাড়ির সামনে ফেলে পালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুটার দিকে জয়নাবাড়ি এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবসায়ী হোসেন আলীর নিজ বাসার সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী হোসেন আলী সাভারের হেমায়েতপুর জয়নাবাড়ী এলাকার মৃত সাধু মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত রাকিব স্থানীয় সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই। সে দীর্ঘদিন যাবত হেমায়েতপুর বাসষ্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং জমিদখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
পুলিশ ও পরিবারের লোকজন জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই রাকিব হোসেন আলীকে বাসায় গিয়ে কথা বলে বাহিরে ডেকে নিয়ে আসে। এসময় রাকিব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ১০ থেকে ১২ জন সদস্য তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় হোসেনকে লোহার রড ও পাইপ দিয়ে এলোপাথারিভাবে মারধর করতে থাকে। এসময় হোসেন আলীর কান্নার শব্দ পেয়ে বাড়ির লোকজন এগিয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে আহত হোসেন আলীকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ শিল্প এলাকা হেমায়েতপুরের বিভিন্ন কারখানার ঝুট ব্যবসা, জমি দখল, ফুটপাতে হকার বসিয়ে চাঁদা আদায়, পরিবহন ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মাসোহারা আদায়সহ এমন কোন কাজ নেই যা তারা করেনা। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন কথা বলতে সাহস পায়না। তাদের অত্যাচারের ঘটনায় কেউ প্রতিবাদ করলে তার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। গত ৫ আগষ্টে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর তারা অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের নেশায় উন্মাদ হয়ে গেছে বলে জানায় এলাকাবাসীরা। আপনপর, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ পরিচিত জনরাও তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা। তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত রাকিবের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সাভার ট্যানারী ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম সবুজ বলেন, মারধরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রসঙ্গতঃ কিছুদিন আগে রমজান নামে এক ব্যবসায়ীকে গুলির ঘটনায় হেমায়েতপুর এলাকার ত্রাস সন্ত্রাসী মোশারফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জামিনে বের হয়ে মোশারফ ওরফে মশা ও তার তিন ভাই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। হেমায়েতপুর এলাকায় দখল ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অবৈধ টাকা কামিয়ে গডফাদার বনে গেছে তারা।
ওএফ/এসআর