কক্সবাজারে উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিকের সঙ্গে ইফতার করেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার (১৪ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়।
ইফতার পূর্ব রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে টানা ৫ মিনিটের অধিক আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় তিনি বলেন, ‘অনরার দুঃখ কষ্ট বুঝিলইবার লাই ও আইস্সে । ও বুঝি লই দুনিয়ার মাইনসরে জানাইব অনরারে অনরার দেশত ফেরত পাঠাইবার লাই কি গরার দরকার ইন গরিব। (আপনাদের দুঃখ কষ্ঠ বুঝার জন্য মহাসচিব এসেছেন। তিনি বুঝে বিশ্ববাসীকে জানাবেন এবং আপনাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কাজ করবেন।)’
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কেউ ওনাকে দাওয়াত দিয়ে আনতে পারেন না। উনি নিজ থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা দেখতে এসেছেন। আশা করছি, রোহিঙ্গা সমস্যার একটি সমাধান হবে।’ সব সময় প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের সাথে রয়েছেন জানিয়ে বলেন, ‘আমি আপনার সাথে আছি। আপনার জন্য নিরাপদ স্বদেশ ফেরত পাঠানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
এর আগে রোহিঙ্গাদের খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বদেশে ফেরত নিশ্চিতে জাতিসংঘ সব করবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের নিরাপত্তার নিশ্চিতের দায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। এটার জন্য কাজ করছে সংস্থাটি। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে হলে মিয়ানমারের রাখাইনেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন রয়েছে।
শুক্রবার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
এর আগে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি চার্টার্ড ফ্লাইট কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান। জাতিসংঘের মহাসচিব কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা সেরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের উদ্দেশে রওনা দেন। বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে রোাহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিবের রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং গণমাধ্যমে কথা বলেন। শেষে প্রধান উপদেষ্টাসহ জাতিসংঘ মহাসচিব উখিয়ায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন।
এসইউ/আরএন