পদ্মার চরে নাজমুল হোসেন ও আমান মণ্ডল হত্যার প্রধান আসামীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে খানপুর গ্রামের নিহত নাজমুল হোসেন (২৬) ও আমান মণ্ডল (৩৬) এবং আহত রাকিব হোসেন (১৮) ও মুনতাজ মণ্ডল (৩২) এর ছবি সম্বলিত ব্যানার প্রদর্শিত হয়। ব্যানারে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কাকন বাহিনীর প্রধান কাকন সহ উজ্জল সরদার, রায়হান আলী, সাগর আলী, রমজান হোসেন, উজির উদ্দিন ও রফিকুল ইসলামের ছবি দেওয়া হয় এবং তাদের গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় চাঁন মণ্ডল, সাহাবুল হোসেন, নিহত নাজমুলের মা নারগিস আরা বেগম, আহত মুনতাজের মা আনজেরা বেগম, বোন বিনারা বেগম, নিহত আমানের বোন মেহেরনিকা বেগম, স্থানীয় আবদুস সালাম, আমজাদ হোসেন, নিহত আমান মণ্ডলের মা খনজনা বেগম, কৃষক ছেত্তাজ মণ্ডল, নিহত নাজমুলের পিতা মিনহাজ মণ্ডল ও নিহত নাজমুলের স্ত্রী শারমিন বেগম প্রমুখ।
নিহত নাজমুলের স্ত্রী শারমিন বেগম মানববন্ধনে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছোট ছোট দুই মেয়ে আছে। তাদের নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব? তাদের কিভাবে বড় করব? তাদের কি খাবার দেব? নিহত নাজমুলের দুই মেয়ের নাম জান্নাতি (৩) ও জামেলা খাতুন (২)।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীর বাঘা, নাটোরের লালপুর, পাবনার ঈশ্বরদী এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সীমান্তবর্তী পদ্মার চরের নীচ খানপুরের হবির চরের দক্ষিণে চৌদ্দ হাজারি মাঠ এলাকায় খড় কাটাকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন খানপুরের মিনহাজ মণ্ডলের ছেলে আমান মণ্ডল ও একই গ্রামের শুকুর মণ্ডলের ছেলে নাজমুল হোসেন। আহত হন খানপুরের তজ্জুল মণ্ডলের ছেলে রুহুল আমিন (৫৫), আশরফ মণ্ডলের ছেলে রাকিব হোসেন (১৮), চান মণ্ডলের ছেলে মুনতাজ মণ্ডল (৩২) এবং রুহুল আমিনের নাতি শাওন হোসেন।
ঘটনায় নিহত আমান মণ্ডলের পিতা মিনহাজ মণ্ডল বাদী হয়ে ২৯ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় কাকন বাহিনীর প্রধান কাকনকে প্রধান আসামী করে মামলা করেন। এছাড়া উজ্জল সরদার, রায়হান আলী, সাগর আলী, রমজান হোসেন, উজির উদ্দিন ও রফিকুল ইসলাম সহ আরও ২৩ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মিনহাজ মণ্ডল বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাকন বাহিনী অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করতে আসার কারণে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। পরে আমরা বাড়ি থেকে দূরে চলে যাই। তাদের ভয়ে মাঠে কাজ করা ও মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ কিনতে যেতে পারছে না। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ কাকন বাহিনীর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
পরের দিন, ২৮ অক্টোবর সকালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামের মৃত জামরুল ঘোষের ছেলে লিটন ঘোষ (৩০) এর মরদেহ পদ্মা নদীর রায়টা ঘাট থেকে উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন ছিল। ঈশ্বরদী নৌ-পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শফিউদ্দিন ধারণা করেন, লিটন কাকন বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এএইচ/আরএন