সাভারের আশুলিয়ায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ফায়ারিংয়ের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টিকারী চার সন্ত্রাসী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামিসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে জামগড়া আর্মি ক্যাম্পের সেনাদল। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ মাদক ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে জামগড়া আর্মি ক্যাম্প। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার গাজীরচট ও কান্দাইল রাজা-বাদশা মার্কেট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ঢাকা জেলার আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার এ আর মন্টু পাটোয়ারীর ছেলে মেহেদী হাসান মিথুন পাটোয়ারী (২৪), একই এলাকার মো. মোজাম্মেল ভূঁইয়া (৪৪), মাসুমা আক্তার রিয়া (২৩), চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাণীনগরের মো. জাহিদুল আলম (২৪), কান্দাইল রাজা-বাদশা মার্কেট এলাকার বাবর হোসেন বাবলু (৪৫), রাজশাহীর জামিরা হাটপাড়ার নায়ন আলী (১৮) এবং বগুড়ার ফুলবাড়ীর মো. গোলাম রাব্বি (১৮)।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকায় কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী তাদের সহযোগীদের নিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছিল। গত রাতে ওই এলাকায় সন্ত্রাসীরা হঠাৎ পাঁচ রাউন্ড গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে বিষয়টি জামগড়া আর্মি ক্যাম্পে জানানো হলে, ক্যাম্পের টহলদল দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযান চালায়। অভিযানে সেনাদল চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেহেদী হাসান মিথুনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একটি বিদেশি পিস্তল (গোলাসহ), বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য (৩,০৪০ পিস ইয়াবা, ৭০০ গ্রাম গাঁজা ইত্যাদি), দেশীয় অস্ত্র ও অপরাধে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত সরঞ্জামাদির মধ্যে রয়েছে—১টি ৭.৬৫ মিমি পিস্তল, ৮ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ২টি ম্যাগাজিন, ১৭টি শটগানের কার্তুজ, ১৬টি পিস্তলের কার্তুজ, ৪টি দেশীয় অস্ত্র (চাপাতি ও ছুরি), ১টি শটগানের বাটস্টক, ১টি হকি স্টিক, ৩,০৪০ পিস ইয়াবা, ৭০০ গ্রাম গাঁজা, ৪ লিটার বিদেশি মদ, ২টি ইলেকট্রিক শকার, অপরাধসংক্রান্ত রেকর্ডযুক্ত ১৩টি মোবাইল ফোন এবং ৩টি ওয়াকি-টকি।
পরে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও উদ্ধারকৃত জিনিসপত্র আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে, অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে ত্রাস সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় গাজীরচট এলাকার জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তার অনুভূতি ফিরে এসেছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযানের প্রশংসা করছেন এলাকাবাসী।
ওএফ/আরএন