বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত একটি আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত থেকে অশ্লীল কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারের অভিযোগে বান্দরবান থেকে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার সকালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'ওই দম্পতি বিদেশি একটি ওয়েবসাইটে নিয়মিত পর্নো কনটেন্ট আপলোড করতেন। তাদের পরিচালিত চ্যানেলটি বিশ্বের জনপ্রিয় পর্নো সাইটগুলোর মধ্যে একটি শীর্ষ স্থানে উঠে আসে।
ওই যুগলের ২৮ বছর বয়সি নারী সদস্য নিজেকে ‘বাংলাদেশের এক নম্বর মডেল’ হিসেবে উপস্থাপন করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তারা বাংলাদেশে বসেই ভিডিও ধারণ, সম্পাদনা ও আপলোড করতেন এবং এর মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করছিলেন।
বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এই যুগল শুধু নিজেরাই অপরাধই করছে না বরং অন্যদেরও এই পথে যুক্ত হতে উৎসাহিত করছেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে বসে পর্ন ভিডিও বানানো এবং প্রচারের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠছে।
সম্প্রতি দ্য ডিসেন্ট নামের একটি পত্রিকা এই দুই যুগলের বিষয়টি সামনে আনে।
এদিকে, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ঘেঁটে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। যা পুলিশ সামনে এনেছে।
ওই নারীর জাতীয় পরিচয়পত্র লেখা রয়েছে, ওই নারী মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। তবে ওই ঠিকানায় গেলে দেখা যায়- সেটি তার প্রথম স্বামীর বাড়ি, যিনি পেশায় একজন জেলে। তার সাবেক শ্বশুর নিশ্চিত করেন, ওই নারী তার পুত্রবধূ ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘একদিন তার পুত্রবধূ বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, ৮ বছর হয়ে গেছে, আর ফিরে আসেনি।’
জানা গেছে, ওই নারীর বাবার বাড়ি একই উপজেলার ভিন্ন একটি গ্রামে। মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই নারীর বাবা বলেন, ‘এক বছর আগে তিনি তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।’
ওই নারীর বাবা আরও বলেন, ‘আমরা গত এক বছর ধরে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখিনি। আমি তাকে ত্যাজ্য করেছি।’
অন্যদিকে পুরুষ সদস্যটির জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, তিনি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সে অন্ধকার জগতের মানুষ। ওর কারণে আমাদের গ্রামের নাম খারাপ হচ্ছে।’
পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট মাদক সংক্রান্ত একটি মামলায় (ধারা ১৫১) ওই পুরুষ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানায় দায়ের করা একটি সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি মুক্তি পান।
এমএ