পাবনার বেড়া উপজেলায় মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন এবং প্রায় ১৫টি বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সংঘর্ষে আহত হাদিস উদ্দিন (৪০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। পরদিন রোববার (২৭ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বেড়া উপজেলা প্রশাসন।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত আদেশে জানানো হয়, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে ঘিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি পুনরায় সহিংসতার আশঙ্কা থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
১৪৪ ধারার আওতায় ওই এলাকায় সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা বহন ও প্রদর্শন, মাইকিং, শব্দযন্ত্র ব্যবহার, পাঁচ বা ততোধিক লোকের একত্রে চলাফেরা এবং সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে ওই গ্রামের পুরোনো মসজিদে মিলাদ মাহফিলে কিয়াম পড়া নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। তখন মসজিদের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে একটি পক্ষ নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করে। মাত্র ১০০ গজ দূরত্বে দুটি মসজিদ হওয়ায় গ্রামে বিভক্তি তৈরি হয়।
গত শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে বিরোধীপক্ষ বাধা দেয়। এতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে পাঁচজনকে বগুড়া ও পাবনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরদিন শনিবার আহত হাদিস উদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত হয়ে ওঠে নতুন মসজিদ সমর্থকরা। তারা প্রতিপক্ষের অন্তত ১৫টি বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওলিউর রহমান জানান, এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং সেলিম হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও সেনা সদস্যরা টহল জোরদার করেছে। পরিস্থিতি এখনও থমথমে।
জেডইউ/এসআর