সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন সুশীলা কার্কি। তিনি দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি ছিলেন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নেপালের প্রেসিডেন্ট দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ স্থানীয় সময় রাত ৯টায় তিনি শপথ নেবেন। জেন-জির বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল এবং সেনাবাহিনীর প্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে এক আলোচনার পর সুশীলা কার্কিকে প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্তে সবাই একমত হন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সুশীলা কার্কি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে। এ সরকারের মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে এবং আজ রাতেই তিনি প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন। ওই বৈঠক থেকেই তিনি কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দেবেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে নেপালের জেন-জিরা আন্দোলনে নামে। এর মধ্যে গত সোমবার বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।
মঙ্গলবার আন্দোলনের তীব্রতা বাড়লে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়েন কেপি শর্মা অলি এবং এরপর তিনি গা-ঢাকা দেন। ওই দিনই বিক্ষোভকারীরা সাবেক দুইজন প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালান। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রীকে রাস্তায় পেটানোর ঘটনাও ঘটে।
কেপি শর্মার পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়। বেশিরভাগ মানুষ সুশীলা কার্কির নাম প্রস্তাব করলেও, একটি পক্ষ প্রকৌশলী কুলমান গিসিংকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি জানায়। কুলমান গিসিং নেপালের বিদ্যুৎ সমস্যা দূর করতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তবে সব শঙ্কা দূর করে এখন সুশীলা কার্কিই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।
সুশীলা কার্কি ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তিনি দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি এবং এখন প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। বিচারক থাকাকালীন তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন, এ কারণেই জেন-জির মধ্যে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে।
তিনি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। একবার একটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুশীলা বলেছিলেন, "ভারত নেপালকে অনেক সহায়তা করেছে।"
আরএন