২৪৩ কোটি টাকা আত্মসাৎবড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ২২ কর্মকর্তা জেল হাজতে |
![]() দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকার কয়লা খনির কর্মকর্তারা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুদকের দায়েরকৃত মামলায় ২২ কর্মকর্তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। দিনাজপুর দুদক এর পিপি মোঃ আমিনুর রহমান জানান, বুধবার দুপুর ২টায় দিনাজপুর স্পেশাল জজ মো. মাহমুদুল করিম তার আদালতে দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সাবেক ও বর্তমান ২২ কর্মকর্তা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক জামিন শুনানি শেষে ওই ২২ কর্মকর্তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের প্রত্যেককে জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উপ-মহাব্যবস্থাপক একেএম খাদেমুল ইসলাম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিবউদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক কোম্পানী সচিব কাশেম প্রাধানিয়া, ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক অশোক কুমার, ব্যবস্থাপক আরিফুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক জাহিদুর রহমান, মহা-ব্যবস্থাপক সতেন্দ্র নাথ বর্মণ, ব্যবস্থাপক সৈয়দ ইমাম হাসান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ জোবায়ের আলী, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজ খান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী খুরশিদুর হাসান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিছুজ্জামান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব, সাবেক মহা ব্যবস্থাপক শরিফুল আলম, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান ও ব্যবস্থাপক শোয়েবুর রহমান। দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইসরাইল হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত ২২ আসামীকে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কড়া পুলিশ পাহাড়ায় জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।তিনি জানান, এই মামলায় চার্জশীট ভুক্ত ২৩ জন আসামীর মধ্যে সাবেক মহাব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান মৃত্যুবরণ করায় বিচারক তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে। এখন চার্জশীট ভুক্ত অপর ২২ আসামীর বিরুদ্ধে বিচারক আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী অভিযোগ গ্রহন শুনানির জন্য দিনধার্য্য করার আদেশ প্রদান করেছেন। আদালতের সূত্রে প্রকাশ, গত ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোঃ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে পাবর্তীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার থানার মামলা নং- ৩০ ধারা ৪০৯/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা। মামলাটি দুদকের আওতাভুক্ত হওয়ায় দুদক সদর দপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ শামসুল আলম দীর্ঘ সময় তদন্ত করে গত ২০১৯ সালের ২২ জুলাই কয়লা খনির সাবেক ও বর্তমান ২৩ কর্মকর্তাকে অভিযোগযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় আসামীরা ইতিপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ আদালত হতে জামিনে মুক্তি ছিল। মামলাটি বিচারের জন্য দিনাজপুর স্পেশাল জজ আদালতে বদলী করা হয়। বুধবার স্পেশাল আদালতে বিচারের প্রথম দিন পূর্ণ জামিন শুনানির জন্য ধার্য্য ছিল। বিচারক আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। মামলার দুদকের আইনজীবী পিপি মোঃ আমিনুর রহমান জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা গত ২০০৬ সাল থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত খনি থেকে উত্তোলনকৃত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২২ মেট্রিক টন কয়লা আত্মসাত করে। এই আত্মসাতের ঘটনা দুদকের তদন্তে প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকার কয়লা আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে অভিযোগপত্র পেশ করা হয়। মামলার আসামীরা সকলেই জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মরত থেকে এই অপরাধ সংঘটিত করেছে। মামলাটি আসামী পক্ষে এ্যাড. নুরুজ্জামান জাহানী, এ্যাড. তৌহিদুল ইসলাম ও দিনাজপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ মাজহারুল ইসলাম সরকার পরিচালনা করেন। ডিএইচ/এইচএস |